স্টাফ রিপোর্টারঃগোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটির এক সদস্যকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া ওই সদস্য হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম হীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিটির কার্যক্রম সকল প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখতে গঠিত তদন্ত কমিটির অপর ৬ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে মো. নজরুল ইসলামকে অব্যাহতি দেয়া হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অনুমোদন ক্রমে এটি করা হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ কমিটিকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। কিন্তু প্রতিবেদন দাখিলের ঠিক ২ দিন আগে কমিটির এক সদস্যকে কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়ায় বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে।
তদন্ত কমিটি থেকে অব্যহতি পাওয়া সহকারী রেজিষ্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে কেন এ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হলো, তার কোন কারণ ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত করছে। আমি পুলিশ ও তদন্ত কমিটিকে সঠিক ভাবে সহাযোগিতা করেছি । এছাড়া চোর ধরতে সহযোগিতা করেছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি গ্রুপ আছে। চুরির ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপ চক্রান্ত করেছে । অব্যাহতির চিঠি আমি হাতে পাই বুধবার দুপুরে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে মঙ্গলবার রাতেই এ চিঠি ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে। আমার প্রতিপক্ষ এ নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছে। আমার মনে হচ্ছে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সঠিক ভাবে হবে না ।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ও আইন অনুষদের ডিন আব্দুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, চুরির ঘটনার সাথে বিশ্ববিদ্যালযের ১ জন শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে। ওই ছাত্র তদন্ত কমিটি সদস্যের পরিচিত। তাই তদন্ত কমিটি যাতে কোন প্রকার প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য কমিটির অন্য সদস্যদের সম্মতিতে সহকারী রেজিষ্ট্রার মো. নজরুল ইসলামকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে । আমরা আমাদের দ্বায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করে যথাসময় প্রতিবেদন জমা দেব ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ( চলতি দ্বায়িত্ব) ড. মো. শাহজাহান বলেন , যখন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, তখন আমাদের জানা ছিলো না কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত । যখন জানতে পেরেছি এ বিশ্ববিদ্যারযের একজন শিক্ষর্থী চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। আর সহকারী রেজিষ্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম সাধারন শিক্ষার্থীদের নিয়েই কাজ করেন। এ ছাড়া এ নিয়ে ফেস বুকে সমালোচনা করা হয়। সে জন্য হয়তো তদন্ত কমিটি বিতর্ক এড়াতে তাকে আপাতত তদন্ত থেকে দূরে রেখেছে ।
উল্লেখ্য, ঈদের ছুটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর পেছন দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১০ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. প্রফেসর নূরউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করেন।
ইতোমধ্যে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার চুরির ঘটনায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মাসরুল ইসলাম পনি শরীফসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া চুরি যাওয়া ৪৯ টি কম্পিউটারের মধ্যে ৩৪টি কম্পিউটার পুলিশ ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করেছে।
Leave a Reply