আজকের গোপালগঞ্জ রিপোর্টঃ
দরাজ কণ্ঠের দেশ বরেণ্য শিল্পী এন্ডু কিশোর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায় প্রার্থনা কুঞ্জ করতে চেয়ে ছিলেন। তার শেষ ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেছে। প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী এন্ডু কিশোর রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সংবাদে তার পৈত্রিক ভিটায় বসবাসকারী স্বজনদের মঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এটি ছড়িয়ে পড়ে গোটা গোপালগঞ্জ জেলায় । প্রিয় এন্ডু কিশোরের মৃত্যু সংবাদ শুনে অনেকেই অঝর ধারায় কেঁদেছেন। জেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ এই গুনী শিল্পীর চলে যাওয়া কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তারা এই শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে কোটালীপাড়ায় সংগীত একাডেমি বা স্কুল স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
প্রয়াত এন্ডু কিশোরের কাকাত ভাই পূর্ণদান বাড়ৈ বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এন্ডু কিশোর স্বস্ত্রীক কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চিথলীয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায় বেড়াতে এসেছিলেন । এ সময় তিনি তার পৈত্রিক ভিটায় একটি ‘প্রার্থনা কুঞ্জ’ করতে চেয়েছিলেন।
পূর্ণদান বাড়ৈ আরো বলেন, এন্ডু কিশোর আমার কাকাতো ভাই। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ বাড়ৈ। এন্ডু কিশোররা ছিলেন ৩ ভাই বোন। ৩ ভাই বোনের মধ্যে এন্ডু কিশোর ছিল ছোট। তার বড় ভাই স্বপন বাড়ৈ। বোন শিখা বাড়ৈ। আমার কাকা ক্ষিতিশ বাড়ৈর কর্মস্থল ছিল রাজশাহী। তিনি রাজশাহীতে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এন্ডু কিশোর রাজশাহীতেই জন্ম গ্রহন করেন। তবে তার বাবার জন্ম কোটালীপাড়া উপজেলার চিথলিয়া গ্রামে।
তিনি আরও জানান, এন্ডু কিশোরের পিতা ক্ষিতিশ বাড়ৈ বরিশালে লেখাপড়া করেছেন। পরে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। তিনি রাজশাহীতে কর্ম জীবন শুরু করেন। তবে তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিবছরই কোটালীপাড়ার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসতেন।
এন্ডু কিশোরের আরো এক কাকাতো ভাই এলিও বাড়ৈ বলেন, গত ৭মাস আগে এন্ডু কিশোরের সাথে আমার শেষ কথা হয়েছে। আমার এক কাকার মৃত্যুতে অনুষ্ঠান করার জন্য তিনি ১০হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আমাদের যে কোন পারিবারিক অনুষ্ঠানে তিনি আমাদের সহযোগিতা করতেন। বিভিন্ন সময়ে ফোন করে আমাদের খোঁজখবর নিতেন। তিনি ছিলেন আমাদের সুহৃদ। তাকে হারিয়ে আমরা মর্মাহত। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।
গোপালগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী বলেন, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এ মহান শিল্পীর পৈত্রিক ভিটা রয়েছে। সেখানে তিনি প্রার্থনা কুঞ্জ করতে চেয়েছিলেন। সেটি করা হলে তার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়া তার স্মৃতি ধরে রাখতে ও নতুন প্রজম্মের শিল্পীকে তার সম্পর্কে জানান দিতে কোটালীপাড়ায় তার নামে একটি সংগীত একাডেমি করার দাবি জানাচ্ছি ।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কিংবদন্তির সংগীত শিল্পী এন্ডু কিশোরের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। জনপ্রিয় এ সংগীত শিল্পীর পৈত্রিক ভিটা কোটালীপাড়ায়। আমরা এ শিল্পীর স্মৃতি রক্ষার্থে কোটালীপাড়ায় একটি সংগীত একাডেমি করার উদ্যোগ গ্রহন করবো।
Leave a Reply