তানভীর হাসান সৈকত……..
ফরিদপুর শহরের গেরদা মসজিদে সংরক্ষিত রয়েছে মুসলিম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও সাহাবিদের পবিত্র নিদর্শন।
চাইলে আপনিও দেখে আসতে পারেন ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা দরগাবাড়ি জামে মসজিদে গিয়ে,
গেরদা জামে মসজিদ সংলগ্ন মিউজিয়াম কক্ষে সংরক্ষিত আছে দুষ্প্রাপ্য ও মহামূল্যবান কিছু স্মৃতিচিহ্ন ।
সেখানে নাইট্রোজেন গ্যাস মিশ্রিত কাচের তৈরি বিশেষ যারে রাখা আছে-
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র দাঁড়ি মুবারক, হজরত আলী (রা:)-এর গোঁফ মোবারক, হজরত ইমাম হাসান (রা:) ও হজরত ইমাম হোসাইন (রা:)-এর কানের দুপাশের দাঁড়ির ওপরের অংশের চুল।
এ ছাড়ার সুরক্ষিত আছে বড় পীর হজরত শেখ সইয়েদ আবদুল কাদের জিলানী (র:)-এর জামা ও হজরত শাহ মাদার (র:)-এর ফতুয়া।
আছে হজরত শাহ আলী বাগদাদি (র:)-এর পাগড়ি, জায়নামাজ, তসবিহ (মাছের দাঁতের তৈরি) ও খাবার খাওয়ার থালা-বাটি (চন্দন কাঠের তৈরি)।
হযরত শাহ আলী বাগদাদি (র:) বংশধর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, ইসলামের চার খলিফার অন্যতম হজরত আলী (রা.) – এর ছেলে ইমাম হোসাইনের বংশধর হজরত শাহ আলী বাগদাদি (র:) ইসলামের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে ৯০০ হিজরির দিকে (প্রায় ৫৫০ বছর আগে) বাগদাদ থেকে ভারতের দিল্লিতে আসেন।
সেখান থেকে বাংলাদেশে আসার সময় এই দুষ্প্রাপ্য সম্পদগুলো সঙ্গে এনেছিলেন।
এর পর থেকে পবিত্র নিদর্শনগুলো ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা দরগাবাড়ি জামে মসজিদের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো মসজিদের অখণ্ড পাথরের তৈরি পিলার বা স্তম্ভসহ অনেক নিদর্শনই অনেক এখনো অক্ষত।
নতুন মসজিদের দুই প্রবেশপথে অখণ্ড পাথরের চারটি পিলারের অংশবিশেষ শোভা পাচ্ছে।
এছাড়া নতুন মসজিদের প্রদর্শনী কক্ষের সামনে পাথরের একটি ফলকে ফারসি ভাষায় লেখা, ১০১৩ হিজরি ও সুরা জুমার আয়াত।
এর থেকে অনুমান করা যায়,
শাহ আলী বাগদাদি (র:)-এর মৃত্যুর পর এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলকটি বর্তমানে নতুন মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে লাগানো আছে।
শিলালিপিতে ফার্সি ভাষায় লেখায় যা বলা হয়েছে: পরম করুণাময় আল্লাহর নামে।
‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিন নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা ত্যাগ কর।
’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহর জন্য একটি মসজিদ বানায়, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানান। ’ রহমানি দরগার বান্দা বাহাদুর খান সোলতানি, তারিখ ১০১৩।
নতুন মসজিদের সামনে আরেকটি ফলকে বাংলায় লেখা—‘হজরত শাহ আলী বাগদাদি (রঃ) কর্তৃক আনিত রাসূলে করিম হজরত মুহাম্মদ (সা:), হজরত আলী (রা:), হজরত ইমাম হাসান (রা:), হজরত ইমাম হুসাইন (রা:), হজরত শেখ আবদুল কাদের জিলানী (র:) এবং অন্যান্য পূণ্যাত্মাদের পবিত্র নিদর্শনাদি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গেরদায় নির্মিত মসজিদ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান।
তারিখ লেখা আছে ‘৭ই এপ্রিল ১৯৭৮ সাল’। সৈয়দ আলী আহসান তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
Leave a Reply